অধস্তন অর্ধশত আদালতের বিচারকদের দুর্নীতি তদন্তে রিট খারিজ
- By Jamini Roy --
- 10 December, 2024
দেশের অধস্তন আদালতের ৫১ বিচারক ও বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার দুর্নীতির তদন্ত চেয়ে করা একটি রিট হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছেন। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) এই আদেশ দেন। রিটটি দাখিল করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. আমিমুল এহসান জোবায়ের।
এই রিটে আইন সচিব, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, এবং মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিবাদী করা হয়েছিল।
রিটটি দাখিলের কারণ ছিল ১৪ অক্টোবর একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত “অবিশ্বাস্য সম্পদ অর্ধ শত বিচারক-কর্মকর্তার” শীর্ষক প্রতিবেদন। এতে অভিযোগ করা হয়, বিচার বিভাগের ৫১ জন কর্মকর্তা অবৈধ উপায়ে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, দুদকের গোপন অনুসন্ধানে বিচারকদের নামে-বেনামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের কেউ কেউ কানাডার বেগমপাড়ায় বাড়ি কিনেছেন এবং দেশে-বিদেশে বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছেন। এমনকি শত শত বিঘা জমির মালিকানা নিয়েও অভিযোগ ওঠে।
হাইকোর্ট রিটটি খারিজ করে দেওয়ার সিদ্ধান্তে রিটের যথার্থতা এবং আইনগত ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। আদালত মনে করে, রিটে উপস্থাপিত অভিযোগগুলো যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যাচাই করা উচিত, কিন্তু হাইকোর্টে সরাসরি রিট আকারে এটি গ্রহণযোগ্য নয়।
বিচারপতিরা আরও উল্লেখ করেন যে, বিচার বিভাগ এবং এর কার্যক্রমের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে এমন কোনো সিদ্ধান্ত আদালতের সংবিধানবিরোধী প্রক্রিয়া হতে পারে।
প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) গোপন অনুসন্ধান এবং প্রাপ্ত তথ্যে বিচারকদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ এসেছে। তবে দুদক থেকে এই তথ্যগুলো এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। এ বিষয়ে ভবিষ্যতে তদন্তের অগ্রগতি এবং আইনি প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রিট খারিজ হলেও বিষয়টি দেশব্যাপী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিচার বিভাগে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আরও শক্তিশালী ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। তবে এ ধরনের অভিযোগ বিচার বিভাগের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং গণতান্ত্রিক কাঠামোর উপর প্রভাব ফেলতে পারে।